মশ শত রাজ্যের ক্লান্তি আমার পাণ্ডুর দেহে বাসা বেঁধে চলেছে অক্টোপাসের মতো…
আর আত্মকেন্দ্রিকতার যাঁতাকল আমার দুরন্ত উদ্যমকে প্রতিনিয়ত গিলে খাচ্ছে শকুনের মতো।
দুপুরের আহার শেষে একটু ফুরসত পেলে যখন কেশ তেলের সুগন্ধী মাখা বালিশে মাথা রেখে একটু ঝিমোতে থাকি…
তখনই ফেলে আসা জীবন দর্পণে আমি আমার আমিকে স্রেফ কালো হাফ প্যান্ট পড়া এক নির্মোহ গ্রাম্য বালককে দেখতে পাই !
প্রবল উচ্ছাসে বাঁশের চাকা ঘুরাতে ঘুরাতে সে বালক একদল উদ্দেশ্যহীন দুরন্ত প্রতিযোগি বালক বালিকার সাথে সবুজের বুকে লেপ্টে থাকা মেঠো পথ ধরে চলে যায় গ্রাম হতে গ্রামান্তরে।
অথচ সে বালক আজ কেবলই সভ্যতার আদিম পুরুষ !
কখনও চৈত্রের খর তাপে এই নিরাসক্ত অভিযাত্রীগণ জিরিয়ে নেয় আম-কাঁঠালের শিকড়ে বসে; নিবিষ্ট চিত্তে পরখ করে নেয় কাঁচা পাটে বাঁধা স্ব স্ব চাকার বাঁধনগুলো।
যেখানে থাকে কেবলই নন্দিত প্রতিযোগিতা…
বালাই নেই কোন প্রতিহিংষার।
অতপর ওরা সবুজাভ তিল ক্ষেতে ঢুকে তিল ফুলের মধু পান করে…ঘাস ফড়িং এর লেজে সূতো বেঁধে আন্দোলিত হয় প্রকৃতির সাথে… ভাসতে থাকে অনাবিল সুখ সাগরে। খুঁজে নেয় নির্মোহ জীবনের সুখ যেখানে নিটোল আনন্দ ছাড়া কিছুই থাকে না।
কখনো বা হারিয়ে যায় খড়ের গাঁদায় যেখানে কারও সন্ধিগ্ন দৃষ্টি পড়ার কারণ থাকে না…সবাই পরস্পর কতোই না আপনার আপন হয়!
কতো নির্ভেজাল সে খড়ের গাদায় লুকোচুরি খেলার সুখ ! আর তিল ক্ষেতের তিল মধু পানের আনন্দ !
রচনাকালঃ ১৫/১০/২০১৯ খ্রিঃ, শ্রীপুর— গাজীপুর