ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেল স্টেশন এলাকায় মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) গভীর রাতে দুটি আন্ত:নগর ট্রেনের মর্মান্তিক দূর্ঘটনায় দায়ী তিনজনকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা প্রশাসক, রেলের কর্মককর্তাদের নিয়ে ৫টি তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। আগামি তিন দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দিবে।
তিনি মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহতদের দেখতে এসে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছে ট্রেনের চালকের অদক্ষতা ও অবহেলার কারণে এ দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সঠিক তদন্তে প্রকৃত কারণ বের হয়ে আসবে। তাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হায়াৎ উদ দৌলা খান এর পক্ষ থেকে তিনটি তদন্ত কমিটি, এবং রেলমন্ত্রনালয়ের ডিজিসহ সর্বমোট ৫টি তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যে গঠন করা হয়েছে।
মন্ত্রী সাংবাদিকদের আরো বলেন, আগামী তিন দিনের মধ্যে আমরা এ তদন্ত টিম থেকে দূর্ঘটনার সঠিক কারণ জানাতে পারবো। তিনি বলেন, আহত মোট ১৩ জন কুমিল্লা মেডিকেলে আসে। এর মধ্যে মোট ৮জন চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছে, দুই জনকে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে এবং বর্তমানে ৩ জনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য রাখা হয়েছে। কসবায় যারা আহত আছে আমরা খোজ নিয়েছি তারাও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া আহত যারা হাসপাতালে তাদেরসহ আহত প্রত্যেককে রেলমন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে নগত ১০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান।
মন্ত্রী আরো বলেন, মঙ্গলবার সকালেই দূর্ঘটনার খবর পাই। খবর পেয়ে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলেই দূর্ঘটনারস্থলে যাই। সেখান থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে আহতদের দেখতে যাই এবং পরিশেষে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসি। এ দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ এলাকায় ট্রেন দূর্ঘটনায় আহতদের দেখতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (কুমেক) এ ছুটে আসেন রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
এসময় মন্ত্রীর সাথে ছিলেন মন্ত্রনালয়ের সচিব মোফাজ্জেল হোসেন, ডিজি শামসুজ্জামান, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো: আবুল ফজল মীর, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম সহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। মন্ত্রী মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে এসেই প্রথমে ট্রেন দূর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন। ট্রেন দূর্ঘটনায় আহত ১৩ জনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে ৭জন পুরুষ, ৫জন নারী ও ১জন শিশু ছিলো। এদের মধ্যে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চলে যায় ২জন। ৮জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যায় এবং আশংকাজনক অবস্থায় অন্য তিন জনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরা হলেন সিলেট শ্রীমঙ্গলের বুনবী এলাকার সোহরাব মিয়া (৪০), সিলেট হবিগঞ্জের কাউছার (২৮) এবং চাঁদপুর জেলার হাইমচর ইশানবালার জাহাঙ্গীর (৩৫)। আহতদের দেখে প্রত্যেককে নগদ ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন রেলমন্ত্রী নুুুরুল ইসলাম সুজন এবং চিকিৎসার সকল ব্যয়ভার সরকার বহন করবে বলে জানান তিনি। এছাড়াও তিনি নিহতদের পরিবারকে রেলমন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে জনপ্রতি এক লক্ষ টাকা ও নগদ আরো ২৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়ার কথা বলেন। এদিকে আহতদের দেখতে বেলা সাড়ে বারোটায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড. আব্দুল মান্নান। এসময় কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেককে নগদ ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হয়।